বৈকাল হ্রদ
শুরুতেই চলুন জেনে নেই বৈকাল হ্রদের বিশালত্ব সম্পর্কে। হ্রদটির আয়তন ৩১
হাজার ৭শ ২২ বর্গকিলোমিটার। এর দৈর্ঘ্য ৬৩৬ কিলোমিটার বা ৩৯৫ মাইল আর প্রস্থ সবোর্চ্চ
৭৯ কিলোমিটার বা ৪৯ মাইল। বিজ্ঞানিদের মতে, ২৫ থেকে ৩০ মিলিয়ন বছর আগে বৈকাল ফাটল এলাকার
ভূগর্ভে তীব্র আলোড়নের ফলে বৈকাল রিফ্ট উপত্যকার সৃষ্টি হয়, আর সেখান থেকেই জন্ম নেয়
বিশাল এই জলরাশি। বিশ্বের গভীরতম এ হ্রদের সর্বাধিক গভীরতা ১,৬৪২ মিটার বা ৫৩৮৭ ফুট
। হৃদটির তলদেশ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১১শ ৮৬ মিটার বা ৩৮৯৩ ফুট নিচে। তবে তলদেশটির নিচেও
রয়েছে প্রায় ৭ কিলোমিটার পলিমাটির স্তর। যার ফলে রিফ্ট বা ফাটলটির তলদেশ সমৃদ্রপৃষ্ঠের
৮ থেকে ১১ কিলোমিটার নিচে অবস্থিত। এতে করে এই রিফ্টটি বিশ্বের গভীরতম কন্টিনেন্টাল
রিফ্ট হিসেবেও বিবেচিত হয়। গবেষকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী রিফ্টটি এখনো জীবন্ত, কেননা
প্রতিবছর এটি ২ সেন্টিমিটার করে বিস্তৃত হচ্ছে। এর ফল্ট জোনও ভূমিকম্পপ্রবণ। প্রায়ই
এখানে হট স্প্রিংস বা উষ্ণ প্রসবন তৈরি হয় এবং কয়েক বছর পর পরই এখানে উল্লেখ করার মতো
ভূকম্পনও অনূভূত হয়।
লেকটি উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ এই তিন অববাহিকতায় বিভক্ত। এদের গড় গভীরতা যথাক্রমে
৯শ, ১৬শ ও ১৪শ মিটার। বৈকালের ৩শ মিটার গভীরে অবস্থিত একাডেমিশিয়ান রিজ বা শৈলশিরা
উত্তর এবং মধ্য অববাহিকাকে আলাদা করেছে। আর মধ্য এবং দক্ষিণ অববাহিকাকে পৃথক করেছে
সেলেঙ্গা ডেল্টা এবং বাগুলডাইকা স্যাডল। অনেক উচুতে অবস্থিত বিশালাকৃতির হৃদের মধ্যে
বৈকাল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ৯০ এর দশকে রাশিয়া, অ্যামেরিকা ও জাপানের বিজ্ঞানীর হ্রদটির
পলিমাটির স্তরে ড্রিল করে গবেষনা চালায়। যা থেকে উঠে এসেছে সাড়ে ৬ মিলিয়নেরও বেশি সময়
ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের নানা তথ্যও। বৈকালই একমাত্র সুপেয় পানির হৃদ যার পানিতে প্রত্যক্ষ
বা পরোক্ষভাবে গ্যাস হাইড্রেটের উপস্থিতি রয়েছে।
উত্তর-পশ্চিমে ইর্কুতস্ক ওবলাস্ত এবং দক্ষিণ-পূবে বুরিয়াত প্রজাতন্ত্রের
মাঝে অবস্থিত বৈকাল হ্রদের চারপাশ পাহাড় পর্বত দিয়ে ঘেরা। হৃদের উত্তর দিকে রয়েছে বৈকাল
পর্বতমালা, আর উত্তর পূর্ব দিকে আছে বারগুজিন রেঞ্জ। এই হৃদে রয়েছে ছোট বড় মিলিয়ে ২৭টি
দ্বীপ। সবচেয়ে বড় দ্বিপটির নাম ওলখন, যা লম্বায় ৭২ কিলোমিটার আর চওড়ায় ১৪ কিলোমিটার।
এটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হৃদবেষ্টিত দ্বীপ। সবমিলিয়ে ৩৩০টি নদীর পানি এসে পড়ছে এই
হ্রদে। এগুলোর মধ্যে সেলেঙ্গা, বারগুজিন, তার্কা এবং উচ্চ আঙ্গারা নদী বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
তবে কেবলমাত্র নিম্ন আঙ্গারা নদীর মাধ্যমে হ্রদের পানি বাইরে বের হওয়ার সুযোগ পায়।
বৈকাল হৃদে পানির মজুদ রয়েছে ২৩ হাজার ৬শ ১৫ কিউবিক কিলোমিটারের বেশী। যা বিশ্বে যত
সুপেয় পানির মজুদ আছে তার ২২ থেকে ২৩ শতাংশ। এর পরিমাণ উত্তর অ্যামেরিকার গ্রেট লেইকস-এর
সবগুলো হৃদের সঞ্চিত স্বাদু পানির চেয়েও বেশি।
পৃথিবীর সবচেয়ে স্বচ্ছ পানির হৃদ হিসেবেও বিবেচিত হয় বৈকাল হ্রদ। শীতকালে
হৃদের ৩০ থেকে ৪০ মিটার পর্যন্ত গভীরতায় খালি চোখেই দেখা সম্ভব হয়। তবে, গ্রীষ্মকালে
তা কমে দাড়ায় ৫ থেকে ৮ মিটারে। হৃদটি প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন সমৃদ্ধ, যার উপস্থিতির
এর গভীর পর্যন্ত পাওয়া যায়। এ কারণে এটি টাঙ্গুনাইকা হ্রদ ও কৃষ্ণ সাগর থেকে একেবারে
আলাদা।
হ্রদের পানির তামাত্রা নির্ভর করে এর অবস্থান, গভীরতা আর ঋতুর উপর। শীত
আর বসন্ত এই দুই ঋতুতে ৪ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত হৃদের উপরিভাগের পানি জমে বরফে পরিণত হয়।
জানুয়ারীর শুরু থেকে মে-জুনের গোড়া পর্যন্ত পুরোটা সময়ই হৃদ ঢাকা থাকে পুরু বরফের স্তরে,
যার পুরুত্ব দাড়ায় দশমিক ৫ থেকে ১ দশমিক ৪ মিটার। আর কিছু কিছু জায়গায় বরফের পুরুত্ব
২ মিটার পর্যন্ত হয়। আর মে জুনের মাঝামাঝি থেকে হ্রদের তাপমাত্রা ধিরে ধিরে বাড়তে শুরু
করে, আগষ্টে তা বেড়ে দাড়ায় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে হ্রদের ৩শ মিটার গভীরতা থেকে শুরু
করে আরো গভীরে পানির তাপমাত্রা মোটামুটি ৩.১ থেকে ৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ
থাকে। অবশ্য গত ৫০ বছরে এই হৃদের তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলে হৃদটির বরফে ঢেকে থাকার সময়কাল আগের তুলনায় কিছুটা কমে গেছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
বৈকাল হ্রদের জীববৈচিত্র্যের সমৃদ্ধ ভান্ডার। যতটুকু জানা গেছে তাতে এখানে
১ হাজারেরও বেশি প্রজাতির উদ্ভিদ এবং আড়াই হাজার প্রজাতির প্রানীকুল রয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের
ধারণা সঠিক সংখ্যা এর থেকে অনেক বেশি হবে। হ্রদের ৮০ শতাংশ প্রাণীই স্থানীয় অর্থাত
যা পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় না। হ্রদে অসংখ্য প্রজাতির ফুলের সন্ধান পাওয়া যায়।
এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য- মার্শ থিসল প্রজাতির ফুল। শুধুমাত্র হ্রদটির পূর্ব প্রান্তেই
দেখা যায় এই উদ্ভিদ। হ্রদের পাড় জুড়ে কিছু অংশে অগভীর পানিতে ডুবে থাকা ম্যাক্রোফাইটিক
উদ্ভিদের দেখা পাওয়া যায়। ৮৫ টিরও বেশি এই প্রজাতির উদ্ভিদ রয়েছে এখানে। তবে হ্রদটিতে
সবুজ শ্যাওলাজাতীয় জলজ উদ্ভিদের প্রাধান্যই বেশি। এমনকি হ্রদটির ৩০ মিটার বা ১শ ফুট
গভীরেও দেখা যায় এসব উদ্ভিদ। এসব উদ্ভিদের অর্ধেকই স্থানীয় প্রজাতির, অর্থাত বাইরে
এর কোন চিহৃ পর্যন্ত নেই।
এই লেকে দেখা মিলবে বৈকাল সীল বা নারপা। এটির বিচরণ পুরো হ্রদ জুড়ে। বিশ্বে
যে তিন প্রজাতির মিঠা পানির সীল রয়েছে তার মধ্যে বৈকাল সীল একটি। এছাড়া, হ্রদের আশেপাশের
বাস রয়েছে ইউরেশিয়ান বাদামী ভাল্লুক, ইউরেশিয়ান নেকড়ে, লাল শিয়াল, এল্ক, সাইবেরিয়ান
লাল হরিণ, রেইনডিয়ার, কস্তুরী হরিণ, বন্যশুয়োর, লাল কাঠবিড়ালি এবং লেমিং এর মতো
অসংখ্য প্রাণীর। এছাড়া হ্রদের তীর জুড়ে বাস রয়েছে ২৩৬ প্রজাতির পাখির, যার ২৯টি-ই আবার
জলজ পাখি। মিঠা পানি হওয়ায় এই হ্রদে রয়েছে প্রচুর মাছ। হৃদ অববাহিকায় ৬৫টির মতো প্রজাতির
মাছ রয়েছে। অবশ্য যার অর্ধেকই এখানকার স্থানীয়। ওমুল মাছ এখানকার সবচেয়ে জনপ্রিয় মাছ,
সাদা রঙের এই মাছটি একেবারে স্থানীয় প্রজাতির। এটি ধরার পর তা ধোয়ায় শুকিয়ে বাজারে
বিক্রি হয়। এছাড়া, বৈকাল ব্লাক গ্রেলিং, হোয়াইট গ্রেলিং এবং বৈকাল স্টার্জন এই তিন
প্রজাতির স্থানীয় মাছের নামও উল্লেখযোগ্য। এছাড়া হ্রদে প্রচুর অমেরুদন্ডী প্রাণীরও
বাস রয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে এম্ফিপড আর অস্ট্রাকড, স্বাদু পানির শামুক উল্লেখযোগ্য
। প্রচুর অক্সিজেন সমৃদ্ধ এ হৃদের ৫ হাজার ফুট গভীর পর্যন্ত জলজ প্রাণীকুলের অস্তিত্ব
পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, একসময়ে বৈকালিয়া নামে পরিচিত বৈকাল অঞ্চলটিতে বহুদিন
ধরেই মানুষের বসবাস রয়েছে। তবে সবচেয়ে পুরোনো মানব বসতি হিসেবে কুরিকানস নামে একদল
উপজাতিতে আবাস ছিলো এখানে। সাইবেরিয়ার এই উপজাতি গোষ্ঠি ষষ্ঠ শতকের দিকে এখানে বসতি
স্খাপন করে। কিন্তু এর আগেও খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের দিকে এই অঞ্চলটি ছিলো জিয়াংগু
সম্প্রদায়ের উত্তরের ভূখন্ড। হ্রদের তীরে হান সাম্রাজ্য এবং জিয়াংগুদের মধ্যে যুদ্ধও
সংঘটিত হয়েছিলো। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে প্রথম শতাব্দী পর্যন্ত হান সেনাবাহিনী
জিয়াংগু বাহিনীর পশ্চাতধাবন করে এবং এক পর্যায়ে তাদের পরাজিতও করে। তাদের দেয়া তথ্য
মতে, এই হৃদটিকে বিশাল একটি সাগর হিসেবেই বিবেচনা করা হতো। এমনকি চীনা পুরানে এটি উত্তর
সাগর নামে বর্ণিত আছে। ষষ্ঠ শতাব্দিতে এই অঞ্চলে বাস শুরু করা কুরিকানসরা এই হৃদের
নামকরণ করে ‘অনেক পানি’ নামে, পরে বুরিয়াতরা একে প্রাকৃতিক লেক আর ইয়াকুতরা সমৃদ্ধ
লেক নামে ভিন্ন দুটি নামণকরণ করে। ১৭ শতকের আগে রাশিয়া এই অঞ্চল পযন্ত বিস্তৃত ছিলো
না, যে কারণে ইউরোপীয়ানদের কাছে অজানাই ছিলো হ্রদটি। ১৬৪৩ সালে রাশিয়া এ অঞ্চলে তাদের
রাজ্য বাড়ানোর পর কুরবাত ইভানভ নামে এক রুশ অভিযাত্রী সর্বপ্রথম এই হ্রদে এসে উপস্থিত
হন।
আবিষ্কার হওয়ার পর থেকে বৈকাল হ্রদের ওপর গবেষণা চালিয়ে আসছে সরকারী বেসরকারী
বহু সংস্থা। এদের মধ্যে স্বাধীন গবেষণা সংস্থা বৈকালিয়ান রিসার্চ সেন্টার হ্রদ ও হৃদের
পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে। ১৯৯৩ সালে হ্রদের ১.১ কিমি গভীরে একটি নিউট্রিনো টেলিস্কোপ স্থাপন
করা হয় যা থেকে জানা গেছে হ্রদটির বিভিন্ন তথ্য। এছাড়া হ্রদের ভূতাত্ত্বিক এবং জীবতাত্বিক
পরীক্ষার জন্য ২০০৮ সালের জুলাই মাসে দুটি ছোটো সাবমার্সিবল পাঠায় রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা।
তবে সাবমার্সিবল দুটি হ্রদের ৫ হাজার ১শ ৮০ ফুটের বেশি গভীরে পৌছাতে পারেনি।
সাইবেরিয়ার মুক্তা নামে খ্যাত এই হ্রদ দিন দিন পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়তা
পাচ্ছে। যা এখানকার অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করে তুলেছে। ২০০৭ সালে রুশ সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক
অঞ্চল হিসেবে ঘোসণা করে বৈকাল হ্রদকে। এরপর ২০০৯ সালে এখানে জার্মান বেসরকারীসংস্থা
ও রুশ সরকারের যৌথ ব্যবস্থায় গড়ে উঠে বহুতল হোটেল। ধীরে ধীরে পৃথিবীবাসীর কাছে পরিচিত
হয়ে উঠে বৈকাল হৃদ। এছাড়া হ্রদটির নানা বৈশিষ্টের কারণে ১৯৯৬ সালে বৈকাল হৃদকে বিশ্ব
ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দেয় ইউনেস্কো। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু পর্যটকের
আগমন ঘটে এখানে। হৃদের পাশে থাকার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় স্থানগুলোর মধ্যে লিস্টভিয়াঙ্কা
গ্রাম, ওলখোন দ্বীপ, রিসোর্ট খাকুসি ও তুরকা গ্রাম উল্লেখযোগ্য। তবে বৈকাল লেকে পর্যটকদের
সংখ্যা বাড়লেও, বাড়েনি এখানকার অবকাঠামো । ওলখোন দ্বীপে যাতায়াতের জন্য রয়েছে একটি
মাত্র বরফের তৈরি রাস্তা যা পর্যটকদের জন্য প্রতিবছর বিশেষভাবে তৈরী করা হয়। বছরের
মাত্র দুটি মৌসুমেই পর্যটকরা আসেন এখানে। একটি হলো মধ্য জানুয়ারী থেকে মধ্য এপ্রিল
যা আইস সিজন নামে অভিহিত। এসময় পুরো হৃদ ঢাকা থাকে বরফে। এই বরফের উপর দিয়ে তখন অনায়াসে
হালকা ও মাঝারি যান চালানো যায়। বেড়াতে আসা পর্যটকরা হাইকিং, আইস ওয়াকিং, স্কেইটিং
বা সাইকেলিং সহ নানা ধরণের বিনোদনমূলক কর্মকান্ডের সুযোগ পান। অনেকে আবার আইস ফিশিং
বা মাছও শিকার করেন। বরফের মধ্যে মাছ শিকাররে অভিজ্ঞতাই অন্য রকম। মধ্য এপ্রিল থেকে
এখানকার তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করায় গলতে শুরু করে বরফের আস্তর। অনেক সময় বরফের পুরুত্ব
বুঝতে না পারায় ঘটে প্রাণহানিসহ বড় ধরণের দুর্ঘটনাও।
পর্যটনের দ্বিতীয় মৌসুম শুরু হয় গ্রীষ্মকালে। সেময় বৈকাল তার রূপ বদলায়।
গ্রীস্মের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা ছোট ছোট গাড়িতে করে ঘুরে ঘুরে পাখি দেখেন,
দেখেন স্থানীয় প্রাণীকুল, অনেকে আবার মাছও শিকার করেন। এছাড়া বৈকালের পানিতে ডাইভিংও
বেশ জনপ্রিয়। তবে হ্রদের বেশির ভাগস্থানের পানি অত্যন্ত শীতল থাকায় ডাইভারদের বেশ সাবধানতা
অবলম্বন করতে হয়।
১৯৬৬ সালে বৈকালের তীর ঘেষে স্থাপন করা হয় কাগজের মন্ড ও কাগজ তৈরীর কারখানা।
আর তাতে দেখা দেয় বিপত্তি। কারখানা থেকে দূষিত বায়ু ও বর্জ্য বৈকালের বাতাস ও পানি
দুই-ই দূষিত করতে থাকে। এর বিরুদ্ধে সোভিয়েত বিজ্ঞানী এবং স্থানীয়দের প্রতিবাদ চলে
কয়েক দশক। লাভজনক না হওয়ায় ২০০৮ সাল কারখানাটি বন্ধ হলেও ২০১০ সালে ফের চালু হয় সেটি।
অবশ্য কোম্পানি দেওলিয়া হয়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় কারখানাটি। এতে
স্থানীয়রা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেও পর্যটনকেন্দ্রগুলো থেকে ফেলা বর্জ্য এবং স্থানীয়
নৌকা ও জাহাজ থেকে ফেলা হাজার হাজর টন তরল বর্জ্য হ্রদের পানিকে দূষিত করে তুলছে প্রতিনিয়ত।