আফ্রিকা মহাদেশ

0


আফ্রিকা মহাদেশ


আফ্রিকা, পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ যার ওপর বিষুব রেখা এবং শূণ্য ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ রেখা দুটো পরষ্পরকে ছেদ করেছে। হোমো স্যাপিয়েন্স নামে পরিচিত আধুনিক মানবজাতির উতপত্তি থেকে শুরু করে প্রাচীনতম মানবনির্মিত সপ্তাশ্চর্য পিরামিডের অবস্থান এই মহাদেশেই। এমন বিভিন্ন কারণে আফ্রিকা মহাদেশের নাম সুপরিচিত। আয়তনের হিসেবে আফ্রিকা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং জনসংখ্যার হিসেবেও বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল মহাদেশ। উভয় ক্ষেত্রেই এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে এশিয়া। কিন্তু জানেন কি, আফ্রিকা মহাদেশের অধিবাসী প্রায় দেড়শো কোটি মানুষের মধ্যে অর্ধেকের বয়সই আঠারোর নীচে। এর বিপরীতে এশিয়া মহাদেশের অর্ধেক অধিবাসীর বয়স একত্রিশের নীচে। তাছাড়া আফ্রিকাই পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ যা চওড়ার তুলনায় বেশী লম্বা। 
 
আফ্রিকা মহাদেশের আয়তন তিন কোটি বর্গ কিলোমিটার বা এক কোটি সতেরো লাখ বর্গ মাইল। অর্থাত স্থলভাগের হিসেবে পৃথিবীর পাঁচ ভাগের এক ভাগ জায়গাই আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত। এই মহাদেশ উত্তরে ভূমধ্যসাগর, পুবে লোহিত সাগর, দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর দিয়ে ঘেরা। আফ্রিকার মূল ভূখণ্ডের সাথে অবশ্য মাদাগাস্কারের মত একাধিক দ্বীপমালা রয়েছে। আয়তনের হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই মহাদেশ মূলত চুয়ান্নটি সার্বভৌম দেশের সমন্বয়ে গঠিত। এই দেশগুলোর মধ্যে আয়তনের হিসেবে আলজেরিয়া বৃহত্তম। আর জনসংখ্যার হিসেবে নাইজেরিয়া শীর্ষে রয়েছে। এর বাইরে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছাড়া আরো দুটি জনপদ রয়েছে এই মহাদেশে। যার মধ্যে সোমালিল্যান্ড অন্যতম। বিশ্বের দীর্ঘতম জলধারা নীলনদ এবং বৃহত্তম উষ্ণ মরুভূমি সাহারার অবস্থানও আফ্রিকা মহাদেশেই। 
 
আফ্রিকা মহাদেশের নামকরণ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। তবে অধিকাংশের মতেই আফ্রিকা শব্দটির উতপত্তি এই মহাদেশের উত্তরাঞ্চলে বসবাসকারী আফ্রি গোত্রের নাম থেকে হয়েছে। এই গোত্রে অধিবাসীরা মূলত প্রাচীন কার্থেজ সাম্রাজ্যের বাসিন্দা ছিল। রোমান সেনাবাহিনীর আগ্রাসনে ঐ কার্থেজ সাম্রাজ্য ধ্বংস হবার পর, ল্যাটিন ভাষায় এই এলাকার নাম দেয়া হয় আফ্রি গোত্রের বাসস্থান বা আফ্রিকা। 
 
আধুনিক মানুষের সূতিকাগার হওয়ায় আফ্রিকা মহাদেশে জনবৈচিত্র্য বিশ্বের অন্য যে কোন স্থানের তুলনায় অনেক বেশী। সমাজবিজ্ঞানীদের হিসেবে এই মহাদেশে কমপক্ষে তিন হাজার আদিবাসী গোত্রের বসবাস রয়েছে। শুধু নাইজেরিয়াই এর মধ্যে প্রায় চারশো গোত্রের আবাসভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জিন কাঠামোর বিচারে আফ্রিকার যে কোন এলাকার স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে যে পরিমান বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়, বাকি পৃথিবীর সব মানুষের জিন কাঠামোয় সেই পরিমান বৈচিত্র্য নেই। কারণ আফ্রিকার বাইরে বসবাসকারী সব মানুষ আনুমানিক পঞ্চাশ থেকে ষাট হাজার বছর আগে এই আফ্রিকার কোন এক অধিবাসীর বংশধর। আগেই জানিয়েছি আফ্রিকা মহাদেশের প্রায় দেড়শো কোটি অধিবাসীর অর্ধেকের বয়সই আঠারোর নীচে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী এই মহাদেশের শতকরা একচল্লিশ ভাগ অধিবাসীই শিশু।
 
জনবৈচিত্র্যের মত আফ্রিকায় ব্যবহৃত ভাষার বৈচিত্র্যও বেশ বাহারী। পুরো বিশ্বে আনুমানিক আট হাজারের মত ভিন্নি ভিন্ন ভাষার প্রচলন রয়েছে। এর চার ভাগের এক ভাগই আফ্রিকা মহাদেশে ব্যবহৃত হয়। এই মহাদেশের অধিবাসী বিভিন্ন গোত্রের সদস্যদের মনের ভাব প্রকাশের জন্য কমপক্ষে দুই হাজার পৃথক ভাষার প্রচলন রয়েছে। এদের মধ্যে ইথিওপিয়ার জাতীয় ভাষা বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। ধারণা করা হয় এই ভাষার বর্ণমালাটি পৃথিবীর প্রাচীনতম বর্ণমালা, যার ব্যবহার এখনো চালু রয়েছে। আর প্রায় সাড়ে তিনশো অক্ষর সম্পন্ন এই বর্ণমালাটি নিসন্দেহে পৃথিবীর দীর্ঘতম বর্ণমালাগুলোরও একটি। 
 
পিরামিড শব্দটি শুনলেই মিশরের কথা মনে পড়ে যায়। সাড়ে চার হাজার বছরেরও বেশী সময় আগে সেখানে নির্মিত এই সুউচ্চ স্থাপনাগুলো এখনো সগর্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ফারাও নামে পরিচিত মিশরের রাজাদের সমাধিস্থল হিসেবে এই স্থাপনাগুলো ব্যবহার করা হতো। বিশাল এই স্থাপনাগুলোর মধ্যে গোপন একটি কক্ষে রাজার মরদেহটি মমি হিসেবে সংরক্ষণ করা থাকতো। কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো পিরামিড কিংবা মমি কোনটাই কিন্তু মিশরে আবিষ্কৃত হয়নি। সাহারা মরুভূমি সংলগ্ন এলাকায় প্রায় সাত হাজার বছরের পুরনো মমি খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা। আর জেনে অবাক হবেন, মিশরের তুলনায় সুদানে প্রায় দ্বিগুণসংখ্যক পিরামিড রয়েছে। এই পিরামিডগুলোও প্রায় সাড়ে চার হাজার বছরের পুরনো। তবে মিশরীয় পিরামিডের তুলনায় এই স্থাপনাগুলো কম উঁচু এবং বেশী খাড়া। তাছাড়া এই পিরামিডগুলোর পৃষ্ঠ সিড়ির মত ধাপ দিয়ে গঠিত। এ ধরণের পিরামিডকে স্টেপ পিরামিড নামে ডাকা হয়। দুর্ভাগ্যবশত এই স্থাপনাগুলো পর্যটকদের কাছে মিশরের পিরামিডগুলোর মত জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি।
 
এই আফ্রিকার পুর্ব প্রান্তে অবস্থিত গ্রেইট রিফ্ট উপত্যকা থেকেই হোমো স্যাপিয়েন্স বা আধুনিক মানব প্রজাতির উতপত্তি হয়েছে বলে ধারণা করেন বিজ্ঞানীরা। তাদের গবেষণা অনুযায়ী বিবর্তনের ধারায় প্রায় দুই থেকে তিন লাখ বছর আগে ঐ এলাকায় হোমো স্যাপিয়েন্স প্রজাতির আবির্ভাব ঘটে। এরপর আনুমানিক প্রায় দুই লাখ বছর আমাদের পূর্বসূরীরা এই আফ্রিকা মহাদেশেই বসবাস করে। অবশেষে প্রায় ষাট হাজার বছর আগে ক্রো ম্যাগনন মানুষ নামে পরিচিত এই প্রাণী আফ্রিকার সীমা পেরিয়ে এশিয়া মহাদেশে পদার্পন করে। অবশ্য আফ্রিকা মহাদেশে মানুষের বিবর্তনের ইতিহাস মাত্র তিন লাখ বছরেই সীমাবদ্ধ না। আধুনিক মানুষের মত একই হোমো গোত্রের অন্তর্ভূক্ত হোমো হ্যাবিলিস এবং হোমো ইরেক্টাসের বিবর্তনও এই মহাদেশেই হয়েছিল। আধুনিক মানুষের প্রাচীনতম পূর্বসূরীদের মধ্যে লুসির নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। আফ্রিকা মহাদেশে আবিষ্কৃত প্রায় চৌত্রিশ লাখ বছর পুরনো এই লুসি অস্ট্রালোপিথেকাস অ্যাফারেনসিস প্রজাতির সদস্য। তবে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ফসিলগুলোর মধ্যে সাহেলান্থ্রোপাস চাদেনসিস সবচেয়ে পুরনো। এই ফসিলটির বয়স আনুমানিক সত্তর লাখ বছর।
 
ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, ডিসকভারি বা অ্যানিমেল প্ল্যানেটের মত টিভি চ্যানেলগুলো দেখার অভ্যাস থাকলে আফ্রিকা মহাদেশের জীববৈচিত্র্য কতটা বাহারী হতে পারে তা অজানা থাকার কথা না। জলে কুমির থেকে শুরু করে ডাঙ্গায় সিংহ সবই আছে এই মহাদেশে। আফ্রিকার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সাভানা বা শুষ্ক তৃণভূমি অবস্থিত। যা মাংসাশী এবং তৃণভোজী উভয় ধরণের অসংখ্য প্রাণীর বসবাসের জন্য আদর্শ স্থান। এর ধারাবাহিকতায় আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ায় অবস্থিত সেরেঙ্গেটি এলাকায় বিশ্বের বৃহত্তম অভিবাসন সংঘটিত হয়। প্রতি বছর অন্তত সাড়ে সাত লাখ জেব্রা আর প্রায় বারো লাখ ওয়াইল্ডাবিস্ট সবুজ ঘাসের সন্ধানে সেরেঙ্গেটি এলাকা পাড়ি দেয়। প্রায় বিশ লাখ প্রানীর এই অভিবাসনের দৃশ্য বেশ রোমাঞ্চকর। তাছাড়া বিশ্বের দ্রুততম পাঁচটি স্থলচর প্রাণীর মধ্যে চারটিই আফ্রিকা মহাদেশে বসবাস করে। এই প্রাণীগুলো হচ্ছে চিতা, ওয়াইল্ডাবিস্ট, সিংহ এবং থমসন গ্যাজেল। এরা সবাই ঘন্টায় পঞ্চাশ মাইল বা আশি কিলোমিটারের বেশী গতিতে দৌঁড়াতে সক্ষম। এছাড়া বিশ্ব জুড়ে বিপন্ন বিভিন্ন বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত প্রাণীগুলোর মধ্যে এক পান্ডা ছাড়া আর সব গুলোর বসবাস এই আফ্রিকা মহাদেশেই। এর মধ্যে গন্ডার, জলহস্তী এবং গরিলার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
 
জীববৈচিত্র্যের মত ভূগর্ভস্থ খণিজ সম্পদের হিসেবে আফ্রিকা বিশ্বের সমৃদ্ধতম মহাদেশ। এই মহাদেশ থেকে কোবাল্ট, প্লাটিনাম, ইউরেনিয়াম এবং স্বর্ণের মত বিপুল পরিমান মূল্যবান ধাতু আহরণ করা হয়। এর পাশাপাশি পৃথিবীর সিংহভাগ হীরাই আসে আফ্রিকার বিভিন্ন খনি থেকে। আইএমএফের হিসেবে বিশ্বে সঞ্চিত স্বর্ণের শতকরা চল্লিশ ভাগ, কোবাল্টের শতকরা ষাট ভাগ এবং প্লাটিনামের শতকরা নব্বই ভাগ এই আফ্রিকা মহাদেশেই অবস্থিত। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে অলংকার হিসেবে যত স্বর্ণ ব্যবহার করা হয় তার অর্ধেকই এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়াইটউইটারস্র্যান্ড নামক একটি খনি থেকে। এছাড়া আফ্রিকার বিভিন্ন খনি থেকে আহরিত সম্পদের মধ্যে অ্যালুমিনিয়াম, বক্সাইট, তামা, লোহা, সীসা, দস্তা, নিকেল এবং টাইটানিয়াম উল্লেখযোগ্য।
 
খনিজ এবং জনসম্পদে এতটা সমৃদ্ধ হবার পরেও আফ্রিকা মহাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য একাধিক কারণ দায়ী। এর মধ্যে রাজনৈতিক এবং ভৌগলিক কারন দুটো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নৃবিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী খৃষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকে আফ্রিকায় ঔপনিবেশিক অধ্যায় শুরু হবার আগ পর্যন্ত মহাদেশটির বিভিন্ন এলাকায় অন্তত দশ হাজার আদিবাসী গোত্রের অস্তিত্ব ছিল। এদের প্রায় সবাই ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত ছিল। অর্থাত এদের ভাষা, পোষাক এবং খাবার থেকে শুরু করে ধর্ম এবং সমাজব্যবস্থা সম্পূর্ণ আলাদা ছিল। এরপর মহাদেশটির বিভিন্ন প্রান্তে উপনিবেশ স্থাপন শুরু করে ইউরোপ এবং এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন পরাশক্তি। রোম, কন্সটান্টিনোপল থেকে শুরু করে দামেস্ক আর বাগদাদ সব শহরের অধীনেই ছিল আফ্রিকা। খৃষ্টাব্দ অষ্টাদশ শতকে এসে এই মহাদেশের ওপর ছড়ি ঘোরানো শুরু করে ইউরোপের পরাশক্তিগুলো। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানী এমনকি বেলজিয়ামের মত দেশও আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের উপনিবেশ স্থাপন করে। এসব অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের রক্ষনাবেক্ষণ বা উন্নয়নের বদলে সাম্রাজ্যবাদীরা এখান থেকে খনিজ সম্পদ রীতিমত লুট করে নিয়ে যায়। অবশেষে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ স্বাধীনতা অর্জন শুরু করে। তবে একবিংশ শতকে এসেও চীনের মত পরাশক্তিগুলো সামরিকবাহিনীর বদলে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই মহাদেশে ঔপনিবেশিক আমল চালু রেখেছে, এমন অভিযোগ অনেকেরই।  
 
আফ্রিকা মহাদেশে বিদ্যমান দারিদ্র্যের আরেকটি বড় কারণ এর ভৌগলিক অবস্থান। আগেই জানিয়েছি, আফ্রিকা পৃথিবীর একমাত্র মহাদেশ যার দৈর্ঘ্য প্রস্থের তুলনায় বেশী। এর ফলে আফ্রিকায় বিদ্যমান জলবায়ু অঞ্চলের সংখ্যা অন্য যে কোন মহাদেশের তুলনায় বেশী। এই মহাদেশের উত্তর প্রান্তে ভূমধ্যসাগরের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া বা মরক্কোর মত দেশগুলোর আবহাওয়া মৃদুভাবাপন্ন। কিন্তু একটু দক্ষিণে গেলেই মরু এলাকার শুরু। যার শুষ্কতা এবং তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে সাহারা মরুভূমি শুরু হয়। এর বিপরীতে মধ্য আফ্রিকায় অবস্থিত বিষুবীয় এলাকায় রয়েছে ঘণ জঙ্গল। জলবায়ুগত এই ভিন্নতা আফ্রিকা মহাদেশে কোন একক রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠতে দেয়নি। তাই এই মহাদেশের জনপদগুলো সবসময় বিচ্ছিন্ন অবস্থাতেই থেকেছে। তবে সম্প্রতি আফ্রিকার সার্বভৌম দেশগুলো একত্রিত হয়ে আফ্রিকান ইউনিয়ন শীর্ষক একটি সংস্থা গঠন করেছে। এই সংস্থার তত্বাবধানে হয়তো মহাদেশটি অবশেষে তাদের অর্থনৈতিক অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবে।

Post a Comment

0Comments

Post a Comment (0)

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Ok, Go it!